দুই মহাতারকা। দুই মহাদেশ। কিন্তু ভাগ্য এক! এক রাতেই চ্যাম্পিয়ন্স কাপ ও এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিলেন লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ফুটবলবিশ্বে যেন একসঙ্গে বাজল বিষাদের ঘণ্টা।
এক যুগ ধরে বিশ্বফুটবলের রাজত্ব করা এই দুই কিংবদন্তি বুধবার রাতে নেমেছিলেন মহাদেশীয় সেমিফাইনালে। তবে শেষ হাসি তুলতে পারেননি কেউই।
কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের সেমিফাইনালে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে ফিরতি লেগে ৩-১ গোলে হেরে যায় ইন্টার মায়ামি। প্রথম লেগে ২-০ গোলে হারা মায়ামির সামনে অন্তত তিন গোলের ব্যবধানে জয়ের চ্যালেঞ্জ ছিল।
ম্যাচের শুরুতে জর্দি আলবার গোলে কিছুটা আশার আলো জ্বলেও ওঠে, কিন্তু এরপরই সব স্বপ্ন চূর্ণ করে দেয় ভ্যাঙ্কুভার। সেবাস্টিয়ান বর্হাল্টার এক গোলের পাশাপাশি দুইটি অ্যাসিস্ট করে দলকে ফাইনালে পৌঁছে দেন।
মেসি নিজেও ছিলেন নিষ্প্রভ—চতুর্থ ম্যাচেও গোলশূন্য। দলও টানা তৃতীয় হারের তিক্ততা নিয়ে বিদায় নেয়।
ম্যাচ শেষে মায়ামি কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানোর উপলব্ধি, ‘আমাদের উন্নতি করতে হবে, এই পরাজয় থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আজকের অনুভূতি খুব খারাপ। আমাদের রক্ষণভাগ দুর্বল হয়েছে, সেটা মেনে নিতে হবে।
অন্যদিকে, এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে জাপানের কাওাসাকি ফ্রন্টেলের কাছে ৩-২ গোলে হেরে বিদায় নেয় আল নাসর। ম্যাচে একাধিক সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হন ৪০ বছর বয়সী রোনালদো। একবার পোস্টে বল লাগালেও জালের দেখা পাননি।
আল নাসরের হয়ে গোল করেন সাদিও মানে ও আয়মান ইয়াহিয়া। তবে প্রতিপক্ষের তারুণ্য ও গতির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে স্তেফানো পিওলির শিষ্যরা।
ম্যাচ শেষে পিওলি বলেন, ‘আমরা প্রচুর ভুল করেছি, সেখান থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হয়। আমরা যা অনুশীলন করেছিলাম, মাঠে তা প্রয়োগ করতে পারিনি।’
দুই মহাদেশ, দুই ভিন্ন প্রতিযোগিতা—কিন্তু একই রাতেই বিদায় নিলেন মেসি ও রোনালদো। সময়ের পালাবদলে তারা হয়তো ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে, কিন্তু মাঠে তাদের উপস্থিতি এখনও সৃষ্টি করে আলোড়ন। তাই এই বিদায় শুধু দুটি ক্লাবের নয়, কোটি ভক্তের হৃদয়েও বয়ে আনল গভীর বেদনা।
একই রাত যেন এক ঘোষণা—নতুনরা আসছে, পুরনোদের সময় ফুরিয়ে আসছে। তবে ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে, এই রাতটি ছিল দুই কিংবদন্তির ট্র্যাজেডির রাত।
Leave a Reply