বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, যাতে জনগণ তাদের পছন্দের প্রতিনিধি বেছে নিতে পারে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মুন্সিরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক গণসংযোগ সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাই, দল করার স্বাধীনতা চাই। এমন একটি বিচার ব্যবস্থা চাই যেখানে সরকারের হুকুমে নয়, আইনের ভিত্তিতে রায় হবে। সরকার যদি এসব কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে, তাহলে জনগণ ভোট দিয়ে নিজের সরকার তৈরি করতে পারবে।”
নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, “আপনাকে জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেনি। জনগণ এখন তাদের প্রতিনিধি নিজেরা নির্বাচিত করতে চায়। আপনি সেই ব্যবস্থাটি যত তাড়াতাড়ি করবেন, ততই দেশের মঙ্গল হবে।”
ফখরুল আরও বলেন, “আমরা বহু মামলা-হামলার শিকার হয়েছি, তবুও দেশ ছাড়িনি। খালেদা জিয়া ছয় বছর জেল খেটেছেন, আমিও ১১ বার জেলে গেছি, কিন্তু রাজনীতি করেছি, চুরি করিনি।”
হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না, আমরা সবাই এক। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক দেশ গড়ব। শিক্ষা, চাকরি, কৃষি এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করব।”
তিনি জানান, বেগম খালেদা জিয়া আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এরপর তারেক রহমানও দেশে ফিরবেন এবং একটি সুন্দর নির্বাচন ও সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
এর আগে, কিসমত কেশুরবাড়ি লক্ষ্মীর হাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “আমরা হিন্দু-মুসলমান ভাগ হবো না। যারা রাজনীতি করে, তারাই জনগণকে নৌকা ও ধানের শীষে ভাগ করে দিয়েছে। এই বিভাজন খুবই ভয়ংকর।”
১৯৪৭ সালের দেশভাগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমরা যুগের পর যুগ মিলেমিশে থেকেছি। আমাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা সেই পথে যাব না।”
তিনি হিন্দু সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করে বলেন, “আপনারা ভোট দিন আর না দিন, আমরা আপনাদের পাশে আছি এবং থাকব।”
অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply