টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় বড় ভাইয়ের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। উপজেলার ফুলকি মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে প্যারালাইজড খোরশেদ আলমের পরিবার এমন অভিযোগ করেছেন ছোট ভাই নবাব আলীর বিরুদ্ধে।
পরিবারের দাবি, ১৯৯৭ সাল থেকে শয্যাশায়ী খোরশেদ আলমকে ভাতা তোলার দায়িত্ব দিয়ে মাঝে মাঝে ঢাকায় পাঠানো হতো নবাব আলীকে। এই সুযোগেই ২০০৫ সালের ৫ অক্টোবর তিনি বড় ভাইয়ের স্বাক্ষর জাল করে নিজের নামে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। অথচ গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে খোরশেদ আলমের সনদের গেজেট নম্বর ৭২৩ এবং লাল মুক্তি বার্তার নম্বর ১১৮১০০২৬০।
অভিযোগে আরও বলা হয়, নবাব আলীর জাতীয় পরিচয়পত্র, জমি ও বিয়ের রেজিস্ট্রেশন, এমনকি সন্তানদের পরিচয়পত্রেও তার নাম নবাব আলী হিসেবে রয়েছে। অথচ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের কার্ডে রয়েছে খোরশেদ আলমের নাম এবং নবাব আলীর ছবি।
খোরশেদ আলমের মেয়ে বিলকিস আক্তার জানান, “আমার বাবা ২৫ বছর ধরে প্যারালাইজড। চাচাকে বিশ্বাস করে তার হাতে কাগজপত্র তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি বিশ্বাসভঙ্গ করে নিজের ছবি ও জাল স্বাক্ষর দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভাতা তুলে নিচ্ছেন। এখন তিনি নিজেই খোরশেদ আলম দাবি করছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমার চাচা এসএসসি পাস হলেও ভাতার কাগজে অষ্টম শ্রেণি পাস উল্লেখ করেছেন। জাতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য সব নথিতে তার প্রকৃত নাম নবাব আলী, কিন্তু ভাতা তোলার কাগজপত্রে হয়ে যান খোরশেদ আলম। এত প্রমাণ থাকার পরও আমরা প্রতিকার পাচ্ছি না।”
একই অভিযোগ করেন খোরশেদ আলমের স্ত্রী মরিয়ম বেগমও।
এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. আকলিমা বেগম জানান, “অভিযোগের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত চারবার শুনানি ও তদন্ত হয়েছে। সেসব প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে আবারও শুনানি প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে। শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।”
Leave a Reply