মাদারীপুরের সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আলমমীরের কান্দি এলাকায় শতবর্ষী একটি বটগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সোমবার (৫ মে) সকাল থেকে কুমার নদীর পাড়ে অবস্থিত গাছটি কাটার কাজ শুরু করেন স্থানীয় কিছু ধর্মীয় নেতা ও মুসল্লি সমাজের প্রতিনিধিরা। ইতোমধ্যে গাছটির অধিকাংশ ডালপালা ও কাণ্ড কেটে ফেলা হয়েছে।
পঞ্চগড়ে দেড় যুগ পর সদর উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, গাছটির গোড়ায় দীর্ঘদিন ধরে কিছু মানুষ বিভিন্ন ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করতেন। বিশেষ করে নারীরা শিন্নি, মিষ্টান্ন ও লাল কাপড় অর্পণ করতেন, যা অনেকের কাছে ‘শিরক’ হিসেবে বিবেচিত। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের আচরণ নিষিদ্ধ হওয়ায় গাছটি অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গাছটি আলমমীরের কান্দি এলাকার সত্তার হাওলাদারের মালিকানাধীন জমিতে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠেছিল। দীর্ঘ সময় ধরে এটি স্থানীয়দের মাঝে ধর্মীয় বিশ্বাস ও নানা কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গাছটির ছায়ায় অনেকেই বিশ্রাম নিতেন এবং অবসর কাটাতেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, বহু মানুষ রোগমুক্তি বা সংকট থেকে মুক্তির আশায় এখানে মানত করতেন। বিশেষত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন উৎসবে গাছটির পূজা করতেন। তাদের বিশ্বাস ছিল, গাছটির ভেতরে একটি বড় সাপ রয়েছে, যা অমাবস্যা ও পূর্ণিমার রাতে বের হয় এবং আবার সকালে গাছের ভেতরে ফিরে যায়। তবে এ ধরনের বিশ্বাসের সঙ্গে বাস্তব ক্ষয়ক্ষতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
গাছ কর্তনের ঘটনাটি এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ এটিকে ধর্মীয় বিশুদ্ধতা রক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে দেখলেও, অনেকেই ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক গাছ নিধনের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
Leave a Reply