চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা মধ্যমটিলা এলাকায় নবম শ্রেণির এক ত্রিপুরা কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতা মো. আবুল কাশেমের (৩৮) বিরুদ্ধে। রোববার (১১ মে) বিকেলে এই ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের ভাষ্যমতে, কিশোরীর বাবা-মা দুজনেই দিনমজুর। ঘটনার সময় তারা বাইরে কাজে ছিলেন। মেয়েটি স্কুল থেকে ফিরে ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিল। ঠিক তখনই আবুল কাশেম পানি খাওয়ার কথা বলে ঘরে ঢুকে ১০০ টাকা দিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। মেয়েটি রাজি না হলে মুখ চেপে ধরে ও পরনের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। তার চিৎকারে আশপাশের ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন ছুটে এলে কাশেম মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়।
সোমবার বিকেলে ভুক্তভোগীর মা জোরারগঞ্জ থানায় গিয়ে আবুল কাশেমকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে বলে জানান জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে ঘটনা জানাজানির পরপরই জোরারগঞ্জ থানা যুবদল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আবুল কাশেমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকায় তাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত আবুল কাশেম অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি কিশোরীর বাবার কাছে টাকা পাওনা ছিলেন, তাই তাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন বলে জানান।
এ ঘটনায় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীসহ স্থানীয়রা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানান অনেকেই।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে, তবে প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে যে আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply