ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের হওয়া মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ২১ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন। শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় নবাব আলী (৬৫) নামে একজন আসামি জামিন পেয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার ২২ আসামি হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষে তারা জেলা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে ২১ জনের আবেদন নামঞ্জুর করা হয় এবং তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক শেখ দেলোয়ার হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইকবাল হোসেন, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম শেখ, যুবলীগের আহ্বায়ক হাসমত হোসেন তালুকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল শেখ, আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মতিয়ার রহমান, গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান এবং আরও অনেকে।
এছাড়াও গ্রেফতার হওয়া অন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন—আবুল বাসার শেখ, বাদশা সিকদার, আসলাম মোল্লা, তাবিবুর রহমান, সেলিম শেখ, আব্দুল কুদ্দুস, আজিজুর রহমান তালুকদার, সুলতান মাহমুদ, আজিজ খন্দকার, শহিদুল ইসলাম, আইয়ুব আলী, আবুল হোসেন, হাসান মিয়া এবং বিএনএম নেতা সৈয়দ আশরাফ আলী ওরফে নায়ক বাশার।
জানা গেছে, মামলাটি দায়ের হয় গত ১৮ জানুয়ারি আলফাডাঙ্গা থানায়। বাদী বিএনপি-সমর্থক দিনমজুর লাভলু সরদার এজাহারে মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও শিক্ষকসহ আওয়ামী লীগের ১৭০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করেন। এ ছাড়া অজ্ঞাত প্রায় তিন হাজার ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, তারা নাশকতা ও সহিংস কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছে। দলটির নেতাদের অভিযোগ, নির্বাচনী বছরকে সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দমন করতেই এই পরিকল্পিত মামলা করা হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বিএনপি-জামায়াতের মদদপুষ্ট একটি চক্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এই মামলা করেছে। অথচ সহিংস রাজনীতির মূল ধারক তারাই।”
Leave a Reply