মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার মানিকনগর কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিএইচসিপি) দায়িত্বপ্রাপ্ত শিবানী রায়ের বিরুদ্ধে কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, দায়িত্বে অবহেলা এবং অসদাচরণের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ এপ্রিল শিবানী রায়কে একটি কৈফিয়ত তলবের নোটিশ প্রদান করা হয় এবং তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়। পরদিন, ২৭ এপ্রিল শিবানী রায় জবাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে বেতন-ভাতা না পাওয়াসহ বিভিন্ন অজুহাত তুলে ধরেন।
তবে সংশ্লিষ্ট অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, ২৪ এপ্রিল স্বাস্থ্য পরিদর্শক ক্লিনিক পরিদর্শনে গিয়ে তাকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পান। পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ থাকা সত্ত্বেও ওষুধ বিতরণ না করা, ক্লিনিকে নিয়মিত উপস্থিত না থাকা এবং জনগণের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও তাতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এমনকি তিনি উপস্থিত না থেকেও নিজেকে উপস্থিত বলে দাবি করেছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকের প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে ইতোমধ্যে কয়েকটি গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপের কারণে সরকারের (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুসারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বদলি ও বেতন-ভাতা বন্ধের সুপারিশ করা হলেও এখনো তা কার্যকর হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, শিবানী রায় পূর্বেও একাধিকবার এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তার আত্মীয়স্বজনের প্রভাবের কারণে বারবার শাস্তির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, “তাকে শোকজ করা হয়েছে এবং সতর্ক করা হয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, তারা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”
স্থানীয়রা এ বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “সরকার বদলালেও বৈষম্য ও প্রভাব খাটানোর সংস্কৃতি এখনো বদলায়নি। দিনের পর দিন দায়িত্বে অবহেলা করেও কিভাবে কেউ স্বপদে বহাল থাকতে পারে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।”
Leave a Reply