কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মনু মিয়া এক ব্যতিক্রমী মানুষ। পেশায় গোরখোদক এই ব্যক্তি মৃত্যুর খবর পেলেই ঘোড়ায় চড়ে ছুটে যান যেকোনো দূরত্বে, বিনা পারিশ্রমিকে খনন করেন কবর। জানাজায় অংশ নিয়েই ফেরেন বাড়ি। জীবনে ইতোমধ্যে তিনি খনন করেছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার কবর।
বর্তমানে বার্ধক্য ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ৬৯ বছর বয়সী মনু মিয়া চিকিৎসাধীন ঢাকার বাংলাদেশ মেডিকেলে। তার সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রীও। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তার প্রিয় বাহন—একটি ঘোড়াকে হত্যা করে ফেলে রেখে যায় পার্শ্ববর্তী মিঠামইনের হাসিমপুর এলাকায়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় ঘোড়াটির। সকালে স্থানীয়রা মৃত ঘোড়াটি দেখে চমকে ওঠেন—“এ তো আমাদের গোরখোদক মনু মিয়ার ঘোড়া!”
ঘোড়াটি ছিল মনু মিয়ার একান্ত সঙ্গী। কবর খোঁড়ার কাজে গত কয়েক দশকে তিনি কিনেছেন মোট ১৪টি ঘোড়া, যেগুলোর খরচ জোগাতে পৈত্রিক সম্পত্তিও বিক্রি করেছেন। নিঃসন্তান এই মানুষটি দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই হাওরের পথে-ঘাটে ঘোড়ায় চড়ে পৌঁছেছেন মৃতের বাড়ি।
তবে এখনও মনু মিয়াকে তার প্রিয় সঙ্গীর মৃত্যুসংবাদ জানানো হয়নি—তার শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনায় রেখে।
ইটনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাফর ইকবাল জানিয়েছেন, রোববার সকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply