যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ থেমে নেই। তবে এর মধ্যেই স্বস্তির খবর হলো—চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। এই প্রক্রিয়া শুরু হবে ৩০ মে’র মধ্যে। মঙ্গলবার এমন তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে, সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে উভয় দেশ একটি বোঝাপড়ায় পৌঁছেছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সীমান্তে মোতায়েনকৃত অতিরিক্ত সশস্ত্র বাহিনীকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
ঘর ছিল, মাঠ ছিল, নদী সব নিয়ে গেল
ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা, বিশেষ করে ডিজিএমও (ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন) পর্যায়ের নেতৃত্বে পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করছেন। ধাপে ধাপে এই প্রত্যাহার সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে রূপরেখা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
গত মাসে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। নয়াদিল্লি এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করলেও, পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করে। এরপর শুরু হয় পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা, যাতে প্রাণ হারান অন্তত ৭০ জন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হস্তক্ষেপ করে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন, যা এখনো কার্যকর রয়েছে। এর ফলে সীমান্তে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও কামান হামলা বন্ধ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মে মাসের শেষ নাগাদ সেনারা সংঘর্ষ-পূর্ব অবস্থানে ফিরে যাবে। সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অতিরিক্ত সেনা ও অস্ত্র ধাপে ধাপে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে দুই দেশ ইতোমধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, সীমান্তের সামনের সারির এলাকা থেকে উভয় পক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে সৈন্য সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল ১০ দিনের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার, কিছু টেকনিক্যাল জটিলতার কারণে সামান্য বিলম্ব হচ্ছে।
স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে মোস্তাফিজ,হাত বাড়ালেন সহানুভূতির আশায়
উল্লেখ্য, কাশ্মীরকে কেন্দ্র করেই ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার ইতিহাস দীর্ঘ। এই অঞ্চলকে উভয় দেশই নিজেদের অংশ বলে দাবি করে আসছে, যার ফলে অতীতে দুবার পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এবং বহুবার সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়েছে তারা।
তবে সাম্প্রতিক সেনা প্রত্যাহারের পদক্ষেপকে কূটনৈতিক মহলে শান্তির ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, এই উদ্যোগ কতটা স্থায়ী হয়।
Leave a Reply