খেলা মানুষের বিনোদন বা শারীরিক কসরতের বিষয়ই শুধু নয়, বরং এক প্রাচীন সংস্কৃতি, যা ইতিহাসের শুরু থেকেই মানবজীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে খেলা-ধুলার রূপ বদলেছে, কিন্তু মানুষের মাঝে এর উপস্থিতি কখনো ম্লান হয়নি। প্রশ্ন জাগে—খেলার শুরু কবে? কোথায়?
প্রাচীন মিশর, গ্রিক, চীন, এবং ভারতীয় সভ্যতাতেই খেলার নানা নিদর্শন পাওয়া যায়। মিশরের পিরামিডে খোদাই করা চিত্রে দেখা যায় বোর্ড গেম ‘সেনেট’ খেলার দৃশ্য, যা খ্রিস্টপূর্ব ২৬৫০ সালেরও পুরোনো। আবার চীনে ‘কু’ নামক ফুটবল সদৃশ খেলার প্রচলন ছিল খ্রিস্টপূর্ব ২৩০০ সালেও।
ভারতীয় উপমহাদেশেও ছিল সমৃদ্ধ ক্রীড়া-ঐতিহ্য। মহাভারতে ‘দ্যূতক্রীড়া’র উল্লেখ যেমন পাওয়া যায়, তেমনি শারীরিক ক্রীড়া হিসেবে কুস্তি, ধনুর্বিদ্যা, ঘোড়দৌড়, জলক্রীড়ার প্রমাণ মেলে। প্রাচীন অলিম্পিক গেমস (খ্রিস্টপূর্ব ৭৭৬) হলো বিশ্বের প্রথম সংগঠিত খেলাধুলার অন্যতম উদাহরণ।
একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে চেনার উপায়
আধুনিক খেলার রূপ গঠিত হয় মূলত ঊনবিংশ শতাব্দীতে। ইংল্যান্ডে ক্রিকেট, ফুটবল, রাগবি, টেনিসের মতো খেলাগুলোর সংগঠিত রূপ দেখা যায়। এর পেছনে ছিল স্কুল-কলেজে শৃঙ্খলাবদ্ধ খেলাধুলার অনুশীলন এবং পরবর্তীতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠনের মাধ্যমে এর বিশ্বায়ন।
বাংলাদেশ তথা বাংলার খেলাধুলার ইতিহাসও প্রাচীন। পল্লী বাংলায় গ্রামীণ খেলাধুলা যেমন কাবাডি, হাডুডু, দড়ি লাফ, গুলতি, গরু দৌড়, নৌকাবাইচ, লাঠিখেলা ইত্যাদি চিরায়ত সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। ব্রিটিশ আমলে পাশ্চাত্য খেলার সংস্পর্শে আসে উপমহাদেশ। কলকাতা হয়ে ঢুকেছিল ফুটবল ও ক্রিকেট—যা আজ জাতীয় আবেগে পরিণত হয়েছে।
খেলার আবিষ্কার কোনো একটি তারিখ বা জায়গায় সীমাবদ্ধ নয়। এটি মানুষের স্বাভাবিক আচরণেরই রূপান্তর—মজার ছলে শুরু, পরে সংস্কৃতি ও পরিচয়ের অংশ। প্রযুক্তি বদলেছে, সমাজ বদলেছে, খেলার ধরন বদলেছে—তবে মানুষ এখনো খেলাধুলার মাধ্যমে খুঁজে নেয় আনন্দ, স্বাস্থ্য আর সংযোগের অনন্য এক মাধ্যম।
Leave a Reply