মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা দুদক কুষ্টিয়া সমন্বিত কার্যালয়ের একটি টিম অভিযান চালায়। এ সময় উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা জাকির হোসেনের পকেট থেকে উদ্ধার হয় ঘুষের ৩৬ হাজার টাকা।
আদালতে হাজির হননি মডেল মেঘনা আলম,জামিন বহাল
অভিযান পরিচালনা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ রিয়াদ। তার সঙ্গে ছিলেন উপসহকারী পরিচালক সাইদুর রহমানসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। অভিযানের সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগও উঠে এসেছে। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন দুদক কর্মকর্তারাই।
সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ জানান, “আমরা যথাযথ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে সরকারি দায়িত্ব পালনের জন্য অফিসে প্রবেশ করি। কিন্তু সহকারী কমিশনার (ভূমি) অহেতুক প্রশ্ন করে আমাদের কার্যক্রমে বারবার বাধা দেন। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব ছিল আমাদের সহযোগিতা করা, কিন্তু তিনি উল্টো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা জাকির হোসেনের দেহ তল্লাশির সময় তার পকেট থেকে ৩৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়, যা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের টাকা বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।”
সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ করে আসছেন স্থানীয়রা। নামজারি, জমি ভাগ, খাজনা প্রদানসহ যেকোনো সেবা নিতে গেলেই ঘুষ না দিলে কাজ হয় না বলে অভিযোগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভুক্তভোগী জানান, “জমির নামজারি করতে একাধিকবার যেতে হয়েছে। টাকা না দিলে ফাইল এক চুলও নড়ে না।”
এক নারী অভিযোগ করেন, “ভূমি অফিসে গেলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ শুধু হয়রানির শিকার হয়। ২০০ টাকার কাজ করতে গিয়ে ২ হাজার টাকা দিতে হয়। এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বিচার চাই।”
অভিযুক্ত উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা জাকির হোসেনের মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন জানান, “আমি শুধু দুদক কর্মকর্তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে তাদের আইডি দেখতে চেয়েছিলাম। যেহেতু অফিসে কোনো লিখিত অভিযোগ ছিল না, তাই জানতে চেয়েছিলাম ৩৬ হাজার টাকা কেন জব্দ করা হলো।”
তবে দুদক কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং অভিযানে ঘুষের টাকাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা হাতেনাতে ধরা পড়েছেন।”
গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তনের আশায়:শহীদ জিয়ার স্মরণে খালেদা জিয়ার বার্তা
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন জানান, “দুদক যদি অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণসহ আমাদের কাছে উপস্থাপন করে, তাহলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন প্রশাসনে পাঠানো হবে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
Leave a Reply