মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা যখন পূর্ণমাত্রার সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে, ঠিক তখনই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। শনিবার (১৪ জুন) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি বলেন, “ইরান একটি ঐক্যবদ্ধ ও ঈমানদার জাতি। আমাদের ঘাড়ে কেউ চড়তে পারবে না।” একইসঙ্গে তিনি ইসরায়েলের ‘অপরাধের’ উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
‘শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না’
পার্স টুডের খবরে বলা হয়, সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় ইরানি সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে এই ভাষণ দেন খামেনি। ভাষণের শুরুতে তিনি নিহতদের ‘শহীদ’ আখ্যা দিয়ে তাদের গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।
করোনা ও ডেঙ্গুর শঙ্কার মধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার থেকে
তিনি বলেন, “কয়েকজন প্রিয় কমান্ডার, দক্ষ বিজ্ঞানী ও নিরপরাধ নাগরিক শাহাদাত বরণ করেছেন। এটা আমাদের জন্য শোকের হলেও একইসঙ্গে গর্বের—কারণ তারা দেশ ও ইসলামের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন।”
‘ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করেছে’
খামেনি ভাষণে সাফ জানিয়ে দেন, ইসরায়েল যদি মনে করে মাত্র একটি হামলা চালিয়ে দায় শেষ করেছে, তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করছে। “এই হামলার মধ্য দিয়েই তারা প্রকৃত অর্থে যুদ্ধের সূচনা করেছে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান অবশ্যই এই হামলার কঠোর জবাব দেবে।”
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন ও সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত জবাব আসছে।”
সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ প্রস্তুতি
খামেনি ভাষণে ইরানের সেনাবাহিনী, বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি), বিমান প্রতিরক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুতিতে রয়েছে। নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ পর্যন্ত সবাই বাহিনীর পাশে রয়েছে।”
আত্মবিশ্বাস ও ঈমানের বার্তা
ধর্মীয় আবেগ ও জাতীয় আত্মবিশ্বাসের সাথে খামেনি বলেন, “আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা বিজয় অর্জন করব। ইসরায়েল পরাজিত হবে। আমাদের শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না। যারা ভাবছে ইরানকে দমন করা যাবে, তারা ইতিহাস ভুলে গেছে।”
আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা
বিশ্লেষকদের মতে, খামেনির এই ভাষণ একটি কৌশলগত মোড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি স্পষ্ট যে, ইরান হয়তো এবার সরাসরি বড় ধরনের সামরিক জবাব দিতে পারে, যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বাড়াবে।
পর্তুগালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে সিলেটের যুবক নিহত
অন্যদিকে, ইসরায়েলও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়তে চাইছে। দুই দেশের মধ্যে এই উত্তেজনা যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে এটি পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে—যার প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক রাজনীতিতে।
Leave a Reply