প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) এবং সংসদের উচ্চকক্ষ—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে ‘একই প্যাকেজে’ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
হামলার পরও পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ইরানের
রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এই অবস্থান জানান।
তিনি বলেন, “অন্ততপক্ষে এনসিসি ও উচ্চকক্ষের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদের সঙ্গে একই প্যাকেজে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে এলে সুবিধা হবে।”
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও জানান, ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী দুই দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো অভ্যন্তরীণ আলোচনা শেষে নিজ নিজ অবস্থান পরবর্তী বৈঠকে তুলে ধরবে। তারপরেই প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।
এর আগে সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের বৈঠকের পঞ্চম দিনের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পৃথক সংবাদ ব্রিফিং করে।
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ প্রসঙ্গে বিএনপির প্রস্তাবনা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা পরপর দুই মেয়াদের বেশি কোনো ব্যক্তি যেন প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন, সে প্রস্তাব দিয়েছি। তবে ব্যাখ্যা হিসেবে বলা হয়েছে, দুই মেয়াদ পর যদি গ্যাপ রেখে একই জোট বা দল পুনরায় ম্যান্ডেট পায়, তাহলে সেই ব্যক্তি পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।”
তিনি বলেন, “আমরা নির্দিষ্ট করে বছর উল্লেখ করিনি, কারণ এটি এককভাবে সিদ্ধান্ত দেওয়ার বিষয় নয়। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে হাউস সিদ্ধান্ত নেবে।”
উচ্চকক্ষ গঠনের ধারণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষে প্রোপোরশনাল নির্বাচন হবে। সাধারণ বিল পাসে ৫০ শতাংশ, আর সংবিধান সংশোধনে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন লাগবে। এতে কেউ এককভাবে দুই-তৃতীয়াংশ পাবে না। রাষ্ট্রপতির নির্বাচন গোপন ব্যালটে উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের সদস্যদের মাধ্যমে হতে পারে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাও আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত হতে পারে। এসবই প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও স্থায়িত্বের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।”
সাংবিধানিক নীতিমালা প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, “পঞ্চদশ সংশোধনী হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জড হয়েছে। আমরা এই সংশোধনী পুরোপুরি বিলুপ্তির পক্ষে। হাইকোর্ট কিছু অংশ সিদ্ধান্তে দিয়েছে, বাকিটা সংসদের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংসদেই হবে।”
বিএনপি পঞ্চম সংশোধনী বহাল রাখতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই সংশোধনীতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’, আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতা নেই। আমরা ম্যান্ডেট পেলে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও গণতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত করব।”
তিনি আরও বলেন, “এখনো এসব বিষয় চূড়ান্ত হয়নি। যদি জাতীয় ঐকমত্য না আসে, তবে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে—এমনটা বলা যাবে না।”
ইরানে মার্কিন হামলার পর আইএইএর জরুরি বৈঠক
আশাবাদ ব্যক্ত করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “জাতি আমাদের কাছে অনেক প্রত্যাশা করে। রাষ্ট্রীয় অর্থ খরচ করে যদি রাজনীতিকেরা একমত হতে না পারেন, তা হলে তা হতাশাব্যঞ্জক হবে। আমি এখনও হতাশ নই। আশা করি, আমরা ন্যূনতম ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। এতে রাজনীতিবিদদের প্রতি জনআস্থা বাড়বে।”
Leave a Reply