জীবন মানেই উত্থান–পতন, সুখ–দুঃখ, হাসি–কান্না, শান্তি–অশান্তির সমন্বয়। কখনো আনন্দে ভরে ওঠে মন, আবার হঠাৎ করেই দুশ্চিন্তা, দুঃখ কিংবা মানসিক অস্থিরতা ভর করে বসে। এই অস্থিরতা মানুষকে ভেতর থেকে দুর্বল করে দেয়, ইবাদতে মনোযোগ কমিয়ে দেয় এবং জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেও নষ্ট করে ফেলে।
তবে ইসলাম শিখিয়েছে কিছু সহজ আমল, যা নিয়মিত অনুশীলন করলে মন হয় প্রশান্ত, হৃদয় হয় শান্ত এবং জীবনের ঝড়-ঝাপটা সামলানোও সহজ হয়ে যায়। আল্লাহতায়ালার নৈকট্যই মানুষের জন্য প্রকৃত প্রশান্তির উৎস।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পবিত্র কোরআন ও হাদিসে মানসিক অস্থিরতা দূর করার জন্য বিভিন্ন দোয়া, উপদেশ ও আমলের কথা উল্লেখ আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৫টি আমল হলো—
দোয়া হলো মুমিনের শক্তিশালী হাতিয়ার। দোয়ার মাধ্যমে দুঃখ–কষ্ট ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আল্লাহতায়ালা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বান্দা যখন তাঁকে আহ্বান করে, তিনি তার ডাকে সাড়া দেন। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বিশেষ দোয়াগুলো পাঠ করতে বলেছেন, যা মানসিক অস্থিরতা দূর করতে কার্যকর।
২. ইখলাস বা একনিষ্ঠতা
মানসিক শান্তির অন্যতম রহস্য হলো ইখলাস। যে কাজ শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা হয় এবং বিনিময়ে মানুষের প্রশংসা আশা করা হয় না, সেই কাজের মধ্যেই থাকে প্রশান্তি। কোরআনে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করার জন্য।
৩. আল্লাহর নিয়ামত স্মরণ করা
প্রতিটি মানুষ আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামতের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু আমরা সমস্যার কারণে সেই নিয়ামত ভুলে যাই। আল্লাহর অনুগ্রহ নিয়ে বেশি বেশি চিন্তা করলে মন থেকে অস্থিরতা সরে যায়, জেগে ওঠে কৃতজ্ঞতা।
৪. আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা
যার অন্তর আল্লাহর ওপর আস্থায় পূর্ণ, তার মনে ভীতি ও অস্থিরতা জায়গা করতে পারে না। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, সাহাবায়ে কেরাম ভয় দেখানো সত্ত্বেও বলেছিলেন—“আল্লাহ আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক।” এর ফলেই তারা বিজয়ী হন।
৫. ধৈর্য ধারণ
ধৈর্য হলো অস্থিরতা দূর করার মহৌষধ। আল্লাহ বলেন, “হে ঈমানদারগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।” (সূরা বাকারা: ১৫৩)।
Leave a Reply