মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়নের মানিকনগর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) শিবানী রায়ের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, অনিয়ম ও নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকার অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) বিলকিস আক্তার ক্লিনিকটি পরিদর্শন করেন এবং অনিয়মের প্রমাণ পান। কালবেলার অনুসন্ধানেও উঠে আসে একই চিত্র। জানা যায়, গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ক্লিনিকের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ওষুধ গ্রহণ করা হয়নি।
সরকার বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। এসব ক্লিনিকে প্রতি মাসে ঠান্ডা, জ্বর, গ্যাস্ট্রিক, এলার্জি, ডায়রিয়া, জন্মনিয়ন্ত্রণসহ প্রায় ২২ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু মানিকনগর ক্লিনিকে সেসব ওষুধ পৌঁছালেও সেগুলো উত্তোলন বা বিতরণ হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, ২০ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ক্লিনিকটি তালাবদ্ধ ছিল। প্রায়শই সিএইচসিপি অনুপস্থিত থাকেন, আর এলেও এক-দু’ঘণ্টার বেশি থাকেন না। রোগীদের ক্লিনিকে প্রবেশ করতে না দিয়ে বাইরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া, ওষুধ না দেওয়া এবং খারাপ আচরণের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ মোল্লা বলেন, “উনি নিয়মিত আসেন না, আর এলেও মিনিট দশেক থেকে চলে যান। কেউ ওষুধ নিতে আসলে ঘুরিয়ে দেন।”
আরেকজন, সুবল চন্দ্র বলেন, “চার-পাঁচ দিন ধরে আসছি, একদিনও তাকে পাইনি।”
তাছলিমা আক্তার অভিযোগ করেন, “বাচ্চার ওষুধ চাইলে উনি খারাপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন।”
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শিবানী রায় বলেন, “কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। নয় মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় মানসিকভাবে ঠিক থাকি না।” তবে নিয়মিত না আসা, ওষুধ না দেওয়া এবং বরাদ্দকৃত ওষুধ উত্তোলন না করার বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও মানিকগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা.মুহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। দু-এক দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সিএইচসিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a Reply