সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো চিহ্নিত হয়নি প্রকৃত হত্যাকারীরা। সম্প্রতি হাইকোর্টে দাখিল করা টাস্কফোর্সের তদন্ত প্রতিবেদন জানায়, এটি কোনো আত্মহত্যার ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দুজনকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন অন্তত দুজন। তবে নমুনায় পাওয়া ডিএনএ বিশ্লেষণে অস্পষ্টতা থাকায় শনাক্ত করা যাচ্ছে না অপরাধীদের। ঘটনাস্থলে চারজনের ডিএনএ পাওয়া গেছে—যার মধ্যে দুজন সাগর ও রুনি, আর বাকি দুজনের পরিচয় মেলেনি।
পাংশায় ফার্নিচার কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ক্ষতি ১৫ লক্ষাধিক টাকা
টাস্কফোর্সের তদন্ত অনুযায়ী, দাম্পত্য কলহ, পেশাগত কারণ কিংবা চুরির উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়নি। ভিসেরা রিপোর্টেও মেলেনি কোনো চেতনানাশক বা বিষাক্ত উপাদানের প্রমাণ। রান্নাঘরের ছুরি ও বঁটি দিয়েই হত্যার ঘটনা ঘটে এবং দুজনই আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় কিছু সময় জীবিত ছিলেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ, হত্যার আগে সাগরের হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়—সম্ভবত প্রতিরোধ করতে পারেন এই আশঙ্কায়। রুনিকে আগে খুন করা হয় বলে ‘ব্ল্যাড পেটার্ন’ বিশ্লেষণে ধারণা মিলেছে। সন্তান মেঘ হত্যাকালে একই খাটে ঘুমাচ্ছিল বলেও জানায় টাস্কফোর্স।
তদন্তকারীরা আরও জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয়দের আনাগোনায় অনেক আলামত নষ্ট হয়ে যায়। রান্নাঘরের বারান্দার একাংশে নতুন ভাঙা অংশ দিয়ে কেউ ঢুকতে-পালাতে পারে, তবে পূর্ণাঙ্গ পায়ের ছাপ না থাকায় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিআইডি ও টাস্কফোর্সের যৌথ বিশ্লেষণে উঠে আসে, নমুনায় পাঁচ থেকে ছয়জনের ডিএনএ থাকায় তা পৃথক করে নির্ভরযোগ্যভাবে শনাক্ত করা যায়নি। ফলে চিহ্নিত হয়নি আসল ঘাতকরা।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় নিহত হন মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। ঘটনার পর রুনির ভাই নওশের আলম শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
বহুল আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব একপর্যায়ে র্যাবের হাতেও থাকলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। বর্তমান টাস্কফোর্স তদন্তেও হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ও জড়িতদের পরিচয় চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
সূত্র:কালবেলা
Leave a Reply