পটুয়াখালীর বাউফলের দক্ষিণ সুলতানাবাদ গ্রামে উদ্ধার করা হয়েছে একটি আহত মেছোবাঘ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আবাসস্থল হারিয়ে লোকালয়ে চলে আসা এই বন্যপ্রাণীটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বন বিভাগ ও স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা।
ইসরায়েলে আবারও ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা,নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলল কর্তৃপক্ষ
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, টানা বৃষ্টির কারণে আশেপাশের ঝোপঝাড় ও ছোট বনাঞ্চল ডুবে যাওয়ায় মেছোবাঘটি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসে। দক্ষিণ সুলতানাবাদ গ্রামের হাওলাদারবাড়ি এলাকায় এক কিশোরের চোখে পড়লে সে বিষয়টি অন্য কিশোরদের জানায়। অতিউৎসাহে তারা মেছোবাঘটিকে তাড়া করে ধরে ফেলে। এরপর চার পা পলিমারের দড়ি দিয়ে বেঁধে বাঁশে ঝুলিয়ে গ্রামের মসজিদের সামনে নিয়ে আসে তারা।
এ সময় কিশোরদের লাঠির আঘাতে ও পরে একটি নৌকার বৈঠার আঘাতে মেছোবাঘটি আহত হয় বলে জানা গেছে। তার মুখে রক্ত দেখা যায় এবং দড়ির চাপে দুর্বল হয়ে পড়ে প্রাণীটি। উৎসুক মানুষদের ভিড়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কেউ কেউ মুরগি শিকারের অভিযোগ তুলে প্রাণীটিকে মেরে ফেলার কথাও বলেন।
পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগেই ‘সেভ দ্য বার্ড অ্যান্ড বি’ নামে স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা দ্রুত উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান খান সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং আহত মেছোবাঘটিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
পরিবেশবাদী সংগঠনের পরিচালক মণ্ডলীর সদস্য শামসুন নাহার বলেন, “বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য চরম হুমকিতে। মেছোবাঘের মতো বন্যপ্রাণী বারবার লোকালয়ে চলে আসছে—এটা বিপদের বার্তা। জনসচেতনতা ও যত্নবান মনোভাব ছাড়া এই বিপন্ন প্রাণীদের রক্ষা সম্ভব নয়।”
কালিশুরী ডিগ্রি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা তাসলিমা বেগম বলেন, “বনজঙ্গল ও ঝোপঝাড় ধ্বংসের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে মেছোবাঘ বিলুপ্তির পথে। এখনই যত্ন না নিলে এদের অস্তিত্ব পুরোপুরি হারিয়ে যাবে উপকূল থেকে।”
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাওয়া ইসরায়েলের চরম দুর্বলতা: খামেনি
উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান খান সোহাগ জানান, স্থানীয়দের সহায়তায় মেছোবাঘটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং পরে সেটিকে পৌর সদরের বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন জঙ্গলে নিরাপদে অবমুক্ত করা হয়েছে।
Leave a Reply