মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ও অসুস্থ এক শিক্ষিকাকে মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী জান্নাত আরা প্রীতি যমুনার চরাঞ্চলের দুর্গম টেংগরহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকা জান্নাত আরা প্রীতি বলেন, গত বুধবার বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সহকর্মী ও স্থানীয়দের সহায়তায় তাঁকে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতির পর তিনি বিষয়টি সহকারী শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করলে, তা সত্ত্বেও তাঁকে সেদিনই অফিসে উপস্থিত হওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়।
পরদিন তিনি অফিসে গেলে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার ও সহকারী শিক্ষা অফিসার তাঁকে কৈফিয়ত তলবের চিঠি ধরিয়ে দিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখেন এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চাপ দেন। একপর্যায়ে তাঁর কাছ থেকে জোরপূর্বক সাক্ষর আদায় করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শিক্ষিকার অভিযোগ, সহকারী শিক্ষা অফিসার উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ বাবদ তাঁর কাছ থেকে একাধিকবার চাপ দিয়ে টাকা নিয়েছেন। উন্নয়ন তহবিলে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে টাকা দিতে বাধ্য হন তিনি, যা পরবর্তীতে ফেরত দেওয়া হয়নি। এমনকি নদীভাঙনের কারণে বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বরাদ্দের টাকা কিভাবে খরচ হয়েছে, তার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকার মা রেহানা আক্তার অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীনও কর্মকর্তারা বারবার ফোন ও মিসড কলের মাধ্যমে মানসিক চাপে ফেলেছেন। পরে চাপে পড়ে মেয়েকে অফিসে নিয়ে গেলে সেখানেও মানসিক হয়রানির শিকার হন।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ আমিনুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের কোনো তথ্য জানাতে হলে আগে সাদা কাগজে লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে হবে, অন্যথায় তিনি এ বিষয়ে কিছু বলবেন না।
এদিকে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সায়েদুর রহমান বলেন, “জোরপূর্বক সাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। তবে এখন পর্যন্ত সহকারী শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a Reply