কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার জের ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় দুই দেশ পরস্পরের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে দুই দেশের বিমান পরিবহন খাতে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় বেশ কয়েকজন পর্যটক নিহত হয়। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও পাকিস্তান সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে এবং সীমান্তে গুলিবিনিময়ের ঘটনাও ঘটে।
মানিকগঞ্জে টেইলার মাস্টার বিল্লাল হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি, আরেকজনের যাবজ্জীবন
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকায় পাকিস্তান প্রথমে ভারতের বিমান সংস্থাগুলোর জন্য নিজের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতও ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত পাকিস্তানি বিমানের জন্য নিজের আকাশসীমা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়।
আকাশসীমা বন্ধের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে ভারতীয় এয়ারলাইনসগুলো। শত শত ফ্লাইট ঘুরপথে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে, যার ফলে জ্বালানি ব্যয়, ট্রানজিট ফি এবং অপারেটিং খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ব্যয় দাঁড়াতে পারে প্রায় ৭৭ কোটি রুপি, যা মাসে প্রায় ৩০৭ কোটি রুপিতে পৌঁছাতে পারে। ফ্লাইট প্রতি বাড়তি খরচ দাঁড়াতে পারে ১,৩৫০ থেকে ৩,০০০ মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে, পাকিস্তানও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কারণ, ভারতীয় ফ্লাইটগুলো পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে ওভারফ্লাইট ফি প্রদান করত, যা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। তবে সিনহুয়া জানিয়েছে, পাকিস্তানের ক্ষতি তুলনামূলকভাবে কম, কারণ পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) কেবল কুয়ালালামপুর রুটেই ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহার করত।
ভারত ও পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞা উভয় দেশের বিমান খাতে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। বিশেষ করে ভারতের জন্য এই সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিকভাবে আরও ভারী হয়ে উঠছে। দীর্ঘমেয়াদে এই টানাপোড়েন কেবল দুই দেশের সম্পর্ক নয়, আঞ্চলিক বিমান চলাচলের ভারসাম্যেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
Leave a Reply