সরকারি বাঙলা কলেজ শাখায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সমন্বয়হীনতা, একতার অভাব এবং রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগে একের পর এক নেতা দায়িত্ব ছাড়ছেন। সংগঠনের নেতৃত্বের এই ক্রমাগত পরিবর্তন স্পষ্ট করছে এক অভ্যন্তরীণ সংকট, যা প্রশ্ন তুলছে সংগঠনটির ভবিষ্যৎ গন্তব্য নিয়ে।
১২ মে (সোমবার) রাতে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে সংগঠনের যুগ্ম সদস্য সচিব মাহতাব মারুফ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পোস্টে তিনি লিখেন, “সংগঠনের কার্যক্রমে পর্যাপ্ত সমন্বয় ও একতার অভাব রয়েছে, যা আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এছাড়া, একটি রাজনৈতিক দল এই অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে, যা অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত।”
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একইভাবে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মারুফ হোসেন পদত্যাগ করেন। তার ভাষায়, “নীতিগত মতানৈক্য এবং সংগঠনের অভ্যন্তরে সমন্বয়ের অভাবে আমি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি।”
পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে সংগঠনের বর্তমান আহ্বায়ক এমএ মুত্তাকী ভিন্ন মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সম্প্রতি কিছু সদস্য রাজনৈতিক লেবেলিংয়ের ভয় থেকেই সংগঠন ছাড়ছেন। তারা মনে করছেন, সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলে একটি রাজনৈতিক ট্যাগ লাগছে, যদিও সেটা প্রমাণিত হয়নি।”
তবে মুত্তাকী স্বীকার করেন, “সদস্য সংখ্যা কমে গেলে কিছুটা প্রভাব পড়ে, তবুও আমরা পদত্যাগকারীদের ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাই।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিজেকে একটি অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিচিত করে আসছে, যার মূল লক্ষ্য সমাজে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ। কিন্তু সম্প্রতি একের পর এক পদত্যাগ সংগঠনটির অরাজনৈতিক অবস্থান এবং নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।
এর আগেও এই শাখা থেকে বেশ কয়েকজন নেতা পদত্যাগ করেছেন, যা সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সমস্যার ধারাবাহিকতাকেই সামনে নিয়ে এসেছে। এখন দেখার বিষয়, নেতৃত্ব সংকট কাটিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আবার কতটা সংগঠিত হয়ে সামনে এগোতে পারে।
Leave a Reply