মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার কাক্কোল গ্রামের বাসিন্দা ও মাচাইন বাজারের টেইলার মাস্টার বিল্লাল হোসেন হত্যাকাণ্ডের মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড এবং আরেকজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৩০ এপ্রিল ২০২৫) মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিন জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—উপজেলার দক্ষিণ খানপুর গ্রামের এখলাছ মাতব্বরের ছেলে পারভেজ হোসেন ওরফে সুমন (৩১) এবং একই গ্রামের শহিদ ব্যাপারীর ছেলে আলীম (৪১)।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে বিল্লাল হোসেনের স্কুলপড়ুয়া কন্যাকে উত্ত্যক্ত করায় অভিযুক্ত সুমনকে কাক্কোল গ্রামে একটি গ্রাম্য সালিশে সতর্ক করা হয়। এরপর থেকেই তিনি প্রতিশোধের নেশায় বিল্লাল ও তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকেন।
ওই বছরের ২ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে মাচাইন বাজারের পাশে বাড়ি ফেরার পথে সুমন ও তার সহযোগীরা বিল্লালের ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনি পাশের খালে পড়ে যান।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে খালের পানিতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি বাইসাইকেল, টর্চলাইট ও হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে। পরদিন ৩ নভেম্বর বিল্লালের স্ত্রী আফরোজা বেগম হরিরামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। স্থানীয়রা মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)-তে হস্তান্তর করা হয়।
২০১৭ সালের ১৫ মার্চ ডিবির এসআই আশিষ কুমার সান্যাল সুমন, আলীম এবং কাক্কোল গ্রামের আ. লতিফের ছেলে আশিক (তৎকালীন বয়স ১৫)–এর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আশিক অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিচার চলছে শিশু আদালতে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বুলবুল আহমেদ গোলাপ জানান, দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর আদালত ২২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ রায় দিয়েছেন।
বিল্লালের স্ত্রী আফরোজা বেগম মুক্তাঙ্গঁন নিউজ ২৪-কে জানান, “আদালত চিন্তাভাবনা করেই রায় দিয়েছে। আমি এই রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।”
Leave a Reply