কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) কারাবন্দি অবস্থায় কারারক্ষীকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে সাক্ষাৎ কক্ষে স্বজনদের সামনে দুইজন কারারক্ষীর প্রতি তিনি হুমকি প্রদর্শন করেন।
কারা সূত্র জানায়, সেদিন কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে সাজুকে দেখতে আসেন তার কয়েকজন স্বজন। সাক্ষাতের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি কথা চালিয়ে যেতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী কারারক্ষী পপি রানী তাকে নিয়ম মেনে সময় শেষ করার অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাজু চিৎকার করে বলেন, “এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলবো।”
সাক্ষাৎকক্ষে উপস্থিত সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে এগিয়ে আসেন কারারক্ষী সুমন। তাকেও লাথি মেরে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু।
ঘটনার সময় তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে বের করে দেন। যাওয়ার সময় তারা কারারক্ষীদের গালিগালাজও করেন।
কারারক্ষী পপি রানী জানান, “আমি দায়িত্ব পালন করছিলাম। তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দিয়েছেন ও গালিগালাজ করেছেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার চেয়েছি।”
কারারক্ষী সুমন বলেন, “আমরা ছোট পদে চাকরি করি, অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কিছু বলতে পারি না।”
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আমি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। কারারক্ষীদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করা হয়।”
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের জেলার এ জি মামুদ বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, মোস্তাফিজুর রহমান সাজু একাধিক মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত সংঘর্ষ ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলায় তার নাম রয়েছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
তিনি কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ী। সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে তার প্রভাব রয়েছে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলেও পরিচিত।
Leave a Reply