সব জল্পনা-কল্পনা, গুজব ও ষড়যন্ত্র পাশ কাটিয়ে অবশেষে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কূটনৈতিক দক্ষতা ও আন্তরিক উদ্যোগে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় বসবে বহুল প্রতীক্ষিত বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাধারণ সদস্যরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তবে বায়রার কিছু নেতার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ সিন্ডিকেট, অনলাইন সিস্টেম বা শ্রমচুক্তিকে দায়ী করে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন—যা শ্রমবাজার সংকুচিত করছে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অভিযোগ উঠেছে, এদের উদ্দেশ্য সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বন্ধ করে দেশকে অস্থিতিশীল করা।
বায়রার সাধারণ সদস্যদের দাবি—শ্রমবাজার খুলে দিতে হবে যেকোনো শর্তে। মালয়েশিয়া সরকার যেসব দেশ থেকে ১২ লাখ কর্মী নেবে, সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশি কর্মীরাই নাকি নিয়োগদাতাদের পছন্দের শীর্ষে। তবুও নেতিবাচক প্রচারণার কারণে অন্য দেশগুলো শ্রমিক প্রেরণ শুরু করলেও বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই শ্রমবাজার বন্ধের চক্রান্তকারীরা দেশের শত্রু, এদের বিরুদ্ধে এখনই সোচ্চার হতে হবে। কারণ, শ্রমবাজার ধ্বংস হলে দেশের অর্থনীতি ও বৈদেশিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সম্পর্ক বহু পুরনো। ১৯৭২ সালে স্বাধীনতা স্বীকৃতি থেকে শুরু করে, বিভিন্ন সময় উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের মধ্য দিয়ে সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের অক্টোবরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ সফর করেন, যা সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
এদিকে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে মালয়েশিয়ায় চীনা কোম্পানির বিনিয়োগ বেড়েছে এবং শ্রমিকের চাহিদাও বহু গুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিশাল শ্রমবাজারে বাংলাদেশের শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ যোগানদাতা হতে পারে।
উন্নত দেশের পথে এগিয়ে যাওয়া মালয়েশিয়া এবং মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে থাকা বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও গভীর হবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।
Leave a Reply