চলতি বছরের মে মাসের প্রথম ১১ দিনে দেশে ৯২ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ প্রবাহ ১৩ শতাংশ বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে প্রবাসীরা পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে বেশি পরিমাণ অর্থ পাঠাচ্ছেন,যার ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়ছে।
এর আগে এপ্রিল মাসে প্রবাসী আয় ছিল ২৭৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৩ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা।
ঘাটতি কমেছে ৮৫ শতাংশ
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়কালে মোট হিসাব ঘাটতি ৮৫ শতাংশ কমে এসেছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে—শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ, অর্থ পাচার হ্রাস এবং আমদানির তুলনায় রফতানি বৃদ্ধির হার বেশি থাকা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, রেমিট্যান্সের এই ধারাবাহিক প্রবাহ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্থিতিশীলতা ফিরিয়েছে, যা সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য বড় ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের শেষ দিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবিশ্বাসের কারণে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশে অর্থ পাঠানো কমিয়ে দেন। সেই সময় রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় ধস নামে।
পরবর্তীতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হলে দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার নেতৃত্বে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আশ্বাস পেয়ে প্রবাসীরা আবারও দেশের প্রতি আস্থা ফিরে পান এবং রেমিট্যান্স পাঠানো বাড়িয়ে দেন।
নতুন সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার ও দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের ফলে গত কয়েক মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যা দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছে।
ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা
ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় আসার ক্ষেত্রে নতুন প্রণোদনা, মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা ও ডলার-টাকার বিনিময় হারে প্রতিযোগিতা রেমিট্যান্স বৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা আশাবাদী যে, ঈদকে কেন্দ্র করে মে মাসে পুরো মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
Leave a Reply