ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত এক হাজার ফিলিস্তিনিকে বিনামূল্যে হজ পালনের আমন্ত্রণ জানিয়েছে সৌদি আরব। সোমবার (১৯ মে) প্রকাশিত খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যারা সংঘর্ষে আত্মীয় হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন কিংবা ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি রয়েছেন—তাদের পরিবার এই সুযোগ পাবেন। হজে অংশ নিতে আমন্ত্রিত ফিলিস্তিনিদের জন্য সৌদি সরকার ভিসা, যাতায়াত, থাকা ও খাওয়ার সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে। নির্বাচিত ব্যক্তিদের মূলত গাজা ও পশ্চিম তীর অঞ্চল থেকে বাছাই করা হয়েছে।
এক ফিলিস্তিনি বলেন, “এই হজ আমাদের জন্য আল্লাহর এক অপার রহমত। যুদ্ধে স্ত্রী ও সন্তান হারিয়ে আমি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিলাম।”
হামাস ও ফাতাহ—দুই পক্ষই সৌদি আরবকে এই মানবিক উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির মন্তব্য করেছেন, “সৌদি আরব সন্ত্রাসীদের পুরস্কৃত করছে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি যেমন একটি মানবিক সংহতির উদাহরণ, তেমনি আঞ্চলিক কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের অংশও হতে পারে। এর আগেও সৌদি আরব ২০২২ সালে ২,০০০ ইউক্রেনীয় শরণার্থী এবং গত বছর কাশ্মিরি পরিবারদের জন্য অনুরূপ হজ ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছিল।
তবে এই আমন্ত্রণ বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। গাজার চলমান অবরোধ ও ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণের কারণে রাফাহ সীমান্ত পেরোনো কঠিন। অনেকেই পাসপোর্ট বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হারিয়েছেন যুদ্ধের কারণে, ফলে সীমান্ত অতিক্রমে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের হজে যেতে দেবে কি না, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদিও খালিজ টাইমস জানিয়েছে, হাজিদের বিমানে ওঠা থেকে সৌদিতে পৌঁছানো পর্যন্ত সবকিছু সৌদি সরকার পর্যবেক্ষণ করবে, তবে গাজার বাসিন্দারা কোন বিমানবন্দর ব্যবহার করবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এই উদ্যোগ সৌদি আরবের “গেস্টস অব গড” প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এটি একদিকে যেমন ফিলিস্তিনিদের জন্য আধ্যাত্মিক প্রশান্তির সুযোগ, তেমনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণের মাধ্যমও হতে পারে।
Leave a Reply