নারী ক্রিকেটে এক নতুন ইতিহাসের জন্ম দিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সানা মির। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) তাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সম্মাননা আইসিসি হল অব ফেমে—যেখানে এর আগে কোনো পাকিস্তানি নারী ক্রিকেটারের নাম ওঠেনি।
যমুনা নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দশম শ্রেণির ছাত্র
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগের এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ইয়ান বিশপ এই ঘোষণা দেন। সানা মিরের সঙ্গে ২০২৫ সালের ‘হল অব ফেম ক্লাস’-এ জায়গা পেয়েছেন আরও ছয় কিংবদন্তি: ভারতের এমএস ধোনি, ইংল্যান্ডের সারা টেইলর, দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা ও গ্রায়েম স্মিথ, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথিউ হেইডেন এবং নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টোরি।
সানা মিরের নাম এখন আইসিসি হল অব ফেমে থাকা মাত্র ১৪ জন নারী ক্রিকেটারের অভিজাত তালিকায়। পাকিস্তান থেকে তিনি হলেন অষ্টম ক্রিকেটার যিনি এই সম্মাননা অর্জন করলেন—এর আগে সাতজন পুরুষ ক্রিকেটার ছিলেন এই তালিকায়: ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, জাভেদ মিয়াদাদ, আব্দুল কাদির, জাহির আব্বাস, ওয়াকার ইউনুস ও হানিফ মোহাম্মদ।
২০০৫ থেকে ২০১৯—প্রায় ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে সানা মির ছিলেন পাকিস্তান নারী ক্রিকেটের অগ্রদূত। এক দক্ষ অফ-স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে তিনি যেমন বল হাতে সফল ছিলেন, তেমনি ছিলেন একজন অনুপ্রেরণাদায়ী অধিনায়ক। টানা আট বছর দলের নেতৃত্বে থেকে পাকিস্তানকে পৌঁছে দিয়েছেন একাধিক শিখরে—যার মধ্যে রয়েছে ২০১০ ও ২০১৪ এশিয়ান গেমসে স্বর্ণপদক জয়, পাঁচটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং দুটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ।
২০১৮ সালে তিনি আইসিসি ওডিআই বোলিং র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠে আসেন—এখনও পর্যন্ত একমাত্র পাকিস্তানি নারী ক্রিকেটার হিসেবে এই কৃতিত্ব তারই। ওয়ানডে ক্রিকেটে তার উইকেটসংখ্যা ১৫১—যা পাকিস্তানের সর্বোচ্চ। পাশাপাশি, তিনি প্রথম এশিয়ান নারী, যিনি খেলেছেন ১০০টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
তার অন্যতম স্মরণীয় পারফরম্যান্স ২০১৭ বিশ্বকাপে, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে ১৪ রানে দলের জয় নিশ্চিত করেন এবং পাকিস্তানকে পৌঁছে দেন সুপার সিক্সে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাকিস্তানের প্রথম ওয়ানডে জয়টিও এসেছে তার অধিনায়কত্বে।
আইসিসিকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় সানা মির বলেন,
“একসময় ভাবতাম, আমাদের দেশে আদৌ কোনো নারী ক্রিকেট দল হবে কি না! আজ আমি সেই স্বপ্নকেও ছাপিয়ে গেছি। আমি দাঁড়িয়ে আছি তাদের পাশে—যাদের ছবি ছোটবেলায় ঘরের দেয়ালে লাগিয়ে রাখতাম। এই সম্মান আমার কল্পনারও বাইরে। আমি কৃতজ্ঞ আইসিসির প্রতি, এবং ধন্যবাদ জানাই আমার কোচ, সতীর্থ, ও পরিবারকে—তাদের ছাড়া এই পথ সম্ভব হতো না।”
কুড়িগ্রামের রৌমারী ও চররাজিবপুরে তীব্র লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজে জনদুর্ভোগ চরমে
২০১৯ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর থেকে সানা মির কাজ করে যাচ্ছেন নারী খেলোয়াড়দের অধিকার, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা, এবং ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পক্ষে।
একজন খেলোয়াড়, নেতা এবং সমাজ সচেতন কণ্ঠ হিসেবে সানা মির হয়ে উঠেছেন ক্রীড়াঙ্গনে এক আলোকবর্তিকা। আজ তিনি শুধু পাকিস্তানের নয়, বিশ্বের কোটি কিশোরী মেয়ের অনুপ্রেরণা।
Leave a Reply