ইসলাম ধর্মে সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে শুক্রবারকে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। এই দিনের মর্যাদা ও তাৎপর্য নিয়ে এসেছে অসংখ্য হাদীস ও কোরআনের আয়াত। শুক্রবারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা হলো সূরা জুমা। পবিত্র কোরআনের ৬২ নম্বর এই সূরাটি মদীনায় অবতীর্ণ হয় এবং এতে মুসলিম সমাজের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা নিহিত রয়েছে।
সূরা জুমা নামটি এসেছে “জামা” বা একত্রিত হওয়া শব্দ থেকে। এটি মূলত শুক্রবারের জামাতে মুসলমানদের একত্রে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব তুলে ধরে। এতে বলা হয়েছে, যখন জুমার আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা-বাণিজ্য, দৈনন্দিন কর্ম ত্যাগ করে নামাজের জন্য উপস্থিত হওয়া প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরজ।
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“তোমরা তোমাদের ঘরকে কবরস্থানে পরিণত করো না, এবং সূরা বাকারা ও সূরা জুমা পাঠ করো।”
(সহীহ মুসলিম)
অন্য একটি হাদীসে বলা হয়েছে:
“যে ব্যক্তি সূরা জুমা পাঠ করে, তার জন্য জুমার দিনের নূর তৈরি হয়।”
(তাফসিরে কুরতুবি)
এই সূরার এক অনন্য দিক হলো—এটি মুসলমানদের আত্মশুদ্ধি, ইবাদতের গুরুত্ব ও দুনিয়া-মুখী জীবনের প্রতি সতর্কতা প্রদান করে। সূরার একটি অংশে ইহুদিদের উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, যারা তাওরাত বহন করেও তার শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করেনি, তাদের মতো হওয়া যাবে না।
বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মুসলমান শুক্রবার জুমার নামাজের সময় খুতবার মাধ্যমে এই সূরার শিক্ষা গ্রহণ করেন। এটি শুধু একটি ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, বরং একটি সামাজিক, নৈতিক এবং আত্মিক বার্তার প্রকাশ।
কোথা থেকে শুরু, কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে?
সূরা জুমা শুধুমাত্র একটি সূরা নয়, এটি মুসলমানদের সাপ্তাহিক পূনর্জাগরণ ও ঐক্যের প্রতীক। শুক্রবারের জুমার নামাজে এই সূরার পাঠ ও তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা একজন মুমিনের জীবনে নূর, বরকত ও হেদায়াতের দরজা খুলে দিতে পারে।
Leave a Reply